দাবি আদায়ে অনড় শাবিপ্রবি শিক্ষকরা

দাবি আদায়ে অনড় শাবিপ্রবি শিক্ষকরা

সিলেট অফিস :: অর্থ মন্ত্রণালয়ের  জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের  দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে ২য় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। 
মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান ভবনের সামনে দুপুর ১২টা থেকে ১ টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন,  সাধারণ-সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর কবীর, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।
প্রত্যয় স্কিম বাতিলের যৌক্তিকতা তুলে ধরে শাবিপ্রবি শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষকদের আত্মমর্যাদা এবং গৌরব রক্ষায় গত মে ২০২৪ থেকে গণস্বাক্ষর, মানববন্ধন, পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি ও সর্বাত্মক কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, অদ্যাবধি যথাযথ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আমাদেরকে আজ রাস্তায় নামিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। বাসের ড্রাইভার কিংবা চা শ্রমিক আন্দোলন করলে সরকার সমঝোতায় আসে কিন্তু লজ্জার সাথে বলতে হয় গত ৩ মাস ধরে শিক্ষকরা আন্দোলন করে আসলেও এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ নূন্যতম সম্মানটুকু দিচ্ছে না। আমাদেরকে মেন্টালি,স্পিরিচুয়ালি দুর্বল মনে করা হচ্ছে তাই হয়তো আমাদের কথায় কর্ণপাত করছে না। আমরা দুর্বল নই, আমরা সারাদেশে আজ একতাবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এক চুল পরিমাণ ও সরে  দাঁড়াবো না। আমরা মাথা নত করতে চাইনা, একটা গোষ্ঠী শিক্ষক ও আমলাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করার পায়তারা করছে,আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।  
সর্বাত্মক কর্মবিরতে আন্দোলন চালিয়ে নিতে শিক্ষকদের কাছে আহ্বান জানিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, এই প্রত্যয় স্কিমের ফলে বেতন-বোনাস, উৎসব ভাতা কিছুই থাকবেনা আর ৩০/৪০ বছর পরে যে পেনশনের সুবিধা দেখানো হচ্ছে সেটা আমরা প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা করে কোনো বীমায় রাখলেও পাব তাহলে এই প্রত্যয়স্কিমের যৌক্তিকতা  কি আমরা বুঝিনা। আমাদের কথা একটাই আমরা এটা মানি না, মানবো না এবং কোনভাবেই মানতে পারিনা। অবিলম্বে এই বৈষম্যমূলক নীতি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। 
শিক্ষক সমিতির সাধারণ-সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর কবীর বলেন, আমাদের আন্দোলন  সরকারের বিরুদ্ধে নয়, আমাদের আন্দোলন তাদের বিরুদ্ধে যারা আমাদেরকে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। 
বিশ্ববিদ্যালয় অচলাবস্থায় রয়েছে তাতে আমাদের কিছু করার নেই কেননা আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। বুঝতে পারছি আমাদের শিক্ষার্থীদের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে কিন্তু এটা আমাদের অস্তিত্ব এবং মর্যাদার লড়াই,  এত বৈষম্য মানা যায় না। যতদিন আমাদের এ দাবি আদায় না হবে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *