৭ দফা দাবিতে সিকৃবির  প্রশাসনিক ভবনে তালা

৭ দফা দাবিতে সিকৃবির প্রশাসনিক ভবনে তালা

নিজস্ব প্রতিবেদক:: প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে গতকালের মতো আজও আন্দোলন করছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) শিক্ষার্থীরা। ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিবৃতিতে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ কার্যকলাপ উল্লেখ করার প্রতিবাদে গত তিনদিন থেকেই আন্দোলন করছেন তারা। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১০ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে গতকাল প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা দেয় আন্দোলনকারীরা।

তাদের অভিযোগ, এ ঘটনায় প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলবেন না। বর্জন করবেন ক্লাস-পরীক্ষাও।এদিকে গতকাল দাবিগুলোর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আলিমুল ইসলামের সাথে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের একটি বৈঠক হয়। যেখানে তাদের ৭ দফা মেনে নেয়ার কথা বলা হলেও সেটি আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে সিন্ধান্ত নেয়া হবে, সেক্ষেত্রে দেড় থেকে দু‘মাসের মতো সময় লাগবে বলে ব্শ্বিবিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তখন শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন তারা। এরই প্রেক্ষিতে আজ সকালে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে রেজিস্ট্রার সহ প্রক্টরিয়াল বডির প্রদত্যাগের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পক্ষে শিক্ষক প্রতিনিধিরা সমঝতার জন্য আসলে আন্দোলনরক শিক্ষার্থীরা সেটি নাকচ করে দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। পরে এ বিষয়ে জানানো হবে। এর আগে ছাত্রদলের একটি ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করে শনিবার গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠায় সিকৃবি প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে ব্যানার ছেঁড়াকে রাষ্ট্রবিরোধী কাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিষয়টি রাষ্ট্রবিরোধী, ঘৃণ্য ও নিন্দনীয় কর্মকাণ্ড। এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এমন বিবৃতি দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা রোববার আন্দোলনে নামে। বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরেও একটি ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ক্যাম্পাসে লাগানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও কোন পদক্ষেপ নেননি তারা। যার প্রেক্ষিতে ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হয়।
২৪ অক্টোবর সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন, অভিযোগ বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের। এছাড়া প্রশাসন কর্তৃক বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষক ও রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে আখ্যা দেওয়াকে অপমানজনক বলেও জানায় আন্দোলনকারীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, অবিলম্বে প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করবেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *