রোটারিয়ান শফিক আহমদ শফি:: সিলেট পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় জনপদ। দেশজুড়ে খ্যাত দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট। যেদিকে তাকাবেন কেবল সবুজের সমারোহ। প্রকৃতিগত ভাবে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠেছে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র। সিলেটের পর্যটন স্পট গুলোর মধ্যে শতভাগ বিনোদন স্পট, প্রাকৃতিক পরিবেশ মিলিয়ে পর্যটকদের মুগ্ধ করছে এক্সেলসিওর সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্ট। হযরত শাহজালাল (রহঃ) এবং ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতিধন্য প্রাকৃতিক সৌর্ন্দযের লীলাভূমি পাহাড়-টিলার নৈসর্গিক সৌর্ন্দযকে অটুট রেখে গড়ে তোলা হয়েছে এক্সেলসিওর সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্ট।
গত সপ্তাহে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এক্সেলসিয়র সিলেট পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি অভিনন্দন জানান এবং এর আধুনিকায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
আর্ন্তজাতিক মানের এই পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরতে আসা পর্যটকরা পাবেন প্রকৃতির এক অনন্য ছোয়া। সিলেট শহর থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে সিলেট তামাবিল মহাসড়কের পাশে খাদিমনগর ইউনিয়নের দলইপাড়া গ্রামের এই উন্নতমানের পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র অবস্থিত। প্রায় ১৭ একর পাহাড়ী জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে অনন্য এই রিসোটর্টি।
এক্সেলসিওর রিসোর্টটের প্রবেশ মুখে দৃষ্টি নন্দন গেইট জেন পর্যটক প্রকৃতিপ্রেমীদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। সু-উচ্চ টিলার উপর রয়েছে লাল সিরামিক ইটের তৈরি প্রাসাদ। যা মধুমালতি ও ক্যামেলিয়া লজ নামে পরিচিত। প্রবেশ পথে প্রায় ৩০০ ফুট উচুতে ওঠার সময় হাতের বা দিকে থাকা কৃত্রিম হ্রদ নজরে পড়ে। এছাড়াও প্রায় ৫০০ প্রজাতির এক লক্ষেরও বেশি গাছগাছালিতো আছেই।
উঁচু টিলায় উঠলে হাতের কাছেই পাবেন স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। সেখানে টেনিস কোর্ট, লং টেনিস কোর্ট, জিমনেশিয়াম ও অডিটোরিয়াম। স্পোর্টস কমপ্লেক্সে রয়েছে অলিম্পিক সাইজ সুইমিংপুল। সেখানে সাতাঁর কাটা ও সাতার শেখার ব্যবস্থা রয়েছে। বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী, সম্মেলন ইত্যাদি ইভেন্ট আয়োজনের প্রধান আকর্ষণ এখন এক্সেলসিয়র কনফারেন্স ও ব্যাঙ্কুইটিং হল।
এক্সেলসিয়রের দুটি ফ্লোর জুড়ে রয়েছে কন্টিনেন্টাল কুইজিন। উচু টিলায় সুরম্য ডাইনিং মনোমুগ্ধকর। অবলোকন করা যায় শত প্রকারের হাজার হাজার বৃক্ষের নয়নাভিরাম দৃশ্য, নান্দনিক স্থাপনা সমূহ, মনোহরা চায়ের উদ্যান, অসংখ্য বৃক্ষরাজিতে ছেয়ে থাকা জনপদ ও লোকালয়। এখান থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে তাকালে পাহাড় ঘেরা দ্বিতল মোটেল দেখা যায়।
ফুলের বাগানে টইটুম্বর ও নির্মল পরিবেশে খানিকটা বিশ্রাম নেয়ারও সু-ব্যবস্থা রয়েছে। ক্ষুধা লাগলে রেস্তোরায় খেয়েও নেয়া যায়। মোটেলের দ্বিতীয় তলা থেকে প্রাকৃতিক অপরুপ সৌর্ন্দয্য দেখা যায়। মোটেলের পিছনের অংশে রয়েছে পিকনিক স্পট।
বছরের সব ঋতুতেই জাকারিয়া সিটিতে ঘুরে আসা যায়। এই পাহাড়ে সস্তায় থাকার জন্য তৈরী কারা হয়েছে দুই মোটেল। জেসটেট হলিডে রিসোর্টে রাতের বাড়তি আকর্ষণ হলো এর তিন দিকে তাকালে তিনটি গ্যাসক্ষেত্রের অগ্নিশিখা দেয়া যায়। এগুলো হচ্ছে হরিপুর, কৈলাশ টিলা ও আলুতলের গ্যাসক্ষেত্র।
এক্সেলসিওর সিলেটে বেড়াতে এসে কাছাকছি হযরত শাহপরান (রহঃ) এর মাজারও জিয়ারত করা যায়। হরিপুর গ্যাসক্ষেত্র, শ্রীপুর, জৈন্তার রাজবাড়ী ও জাফলংও ঘুরে বেড়ানো যায় এই রিসোর্টে অবস্থান করেই। এখানে রয়েছে শিশুদের জন্য বিনোদন পার্ক ও ওয়াটার ওয়েভ ব্যবস্থা। এছাড়া এখানে দেশের বিরল প্রজাতির পাখির সংগ্রহ ও উন্নত যন্ত্রপাতিসহ আর্ন্তজাতিক মানের স্বাস্থ্যকেন্দ্র, জগিং ট্রাক, বিলিয়ার্ড, মিনি চিড়িয়াখানা, আধুনিক সুইমিংপুল, বিনোদন পার্ক, মসজিদ ও লেক আছে। জেসটেট হলিডে রিসোর্টে এর মোটেলের সুযোগ-সুবিধা তিন তারকা মানের।
এক্সেলসিয়র সিলেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুকুর রহমান বলেন, সিলেট ভ্রমণকারীদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দময় পরিবেশে খাবার ও অবস্থান নিশ্চিত করতে এক্সেলসিয়র বদ্ধ পরিকর।
নিরাপদ আবাসন ও বিনোদনের আকর্ষনীয় স্থান হিসেবে এক্সেলসিয়রের বিস্তৃতি বেশ লক্ষ্যণীয়। ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি সহ পর্যটন শিল্পের বিকাশে নতুন মাত্রা সৃষ্টি করবে এক্সেলসিয়র সিলেট । তিনি এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেন।
এক্সেলসিয়র সিলেটের চেয়ারম্যান মোঃ জিলু মিয়া জানান, পর্যটন বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য এক্সেলসিয়রকে আরো আধুনিক ও নান্দনিক সাজে সাজানো হয়েছে। ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের জন্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে, আরো আধুনিকায়ন করতে বেশ কিছু উদ্যোগ ও গ্রহণ করা হয়েছে। যার ফলে এক্সেলসিয়র সিলেটে স্থানীয় এবং জাতীয় অতিথিদের পদচারণা বৃদ্ধি পেয়েছে। পর্যটকদের আকাঙ্খা পূরণে শতভাগ আশাবাদী এক্সেলসিয়র কতৃপক্ষ বলে জানান তিনি ।