রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বিকেলেছবি: দীপু মালাকার
বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখনো সময় আছে, জনগণের যে ন্যায়সংগত আন্দোলন, সংবিধানসম্মত আন্দোলন, সেই আন্দোলনকে বাধা দেবেন না।
গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক প্রতিবাদ জনসমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাস করি। এখনো আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছি। এভাবেই আমরা এগিয়ে যাব। আমরা বহুদূর এগিয়ে গেছি। বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।’
২৯ জুলাই ঢাকার চার প্রবেশমুখে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে ‘পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলা, গুলি, মারধর ও গণহারে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে’ কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই সমাবেশ হয়। মির্জা ফখরুল জানান, আন্দোলনরত দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই তাঁরা এক দফা আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন।
শনিবারের অবস্থান কর্মসূচির উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা অবরোধও করিনি, হরতালও দিইনি, আমরা নেতা-কর্মীদের নিয়ে একটা অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছি। সেটাতে তারা ভয়ে ভীত হয়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে, তাদের সব গুন্ডা বাহিনী নিয়ে, হাজার হাজার পুলিশ-বিডিআর যুদ্ধের সাজে সজ্জিত হয়ে সে জায়গাগুলোতে অবস্থান নিয়েছে।’ তিনি বলেন, নিরীহ-নিরস্ত্র জনগণের ওপরে জঘন্যভাবে অত্যাচার করেছে।
দেশের ডান–বাম সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটা ঐক্য তৈরি হয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই ঐক্য হচ্ছে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়।
একতরফা নির্বাচনের উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল সরকারের উদ্দেশে বলেন, বারবার একই কথা বলবে, বারবার একই কায়দা করবে, মানুষকে বোকা বানিয়ে তুমি নিয়ে যাবে, সেটা আর হবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, এক দফা এক দাবি, এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন দিতে হবে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে।
ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম নামের একটি সংগঠনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের ঘটনার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার এদের টাকা দিয়ে বিদেশ থেকে ভাড়া করে নিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, গতবারও তাদের আনা হয়েছিল। এ ধরনের নামহীন, চিহ্নহীন লোকজন নিয়ে এসে বলতে হচ্ছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। এই দেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে যে এ দেশে নির্বাচন হবে। বিএনপিও নির্বাচন চায়। কিন্তু শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন চায় না। বিএনপি একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বক্তব্য দেন। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহসাচিব রুহুল কবির রিজভী, উপদেষ্টা পরিষদের আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানী, কৃষক দলের শহীদুল ইসলাম, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ ও উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হক।