অস্বস্তির বাঁশবাড়ি কলোনিতে এখন ফুলের সৌরভ

অস্বস্তির বাঁশবাড়ি কলোনিতে এখন ফুলের সৌরভ

ময়মনসিংহ নগরের বাঁশবাড়ি কলোনিতে মূলত নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস। ছোট একটি সড়কের দুই পাশে মানুষের ঘনবসতি। বছরখানেক আগেও নগরের এই কলোনির প্রধান সড়কটি ছিল ভাঙাচোরা। বর্ষাকালে কাদাপানির কারণে মানুষের দুর্ভোগের সীমা ছিল না। সড়কের দুই পাশে জমে থাকত আবর্জনা। অন্য এলাকার বাসিন্দারা ওই কলোনিতে গেলে সড়কের কাদা আর আবর্জনার দুর্গন্ধে অস্বস্তিতে পড়তেন। তবে বদলে গেছে ‘চিরচেনা’ সেই বাঁশবাড়ি কলোনি। এখন ওই কলোনিতে ছড়িয়ে থাকে ফুলের সৌরভ।

বাঁশবাড়ি কলোনির আনুমানিক ৬০০ মিটার সড়কের দুই পাশে টবের মধ্যে লাগানো হয়েছে ফুল, পাতাবাহারসহ নানা প্রজাতির গাছ। এতে যেমন দৃষ্টিনন্দন হয়েছে বাঁশবাড়ি কলোনি, তেমনি রাতের বেলায় ছড়িয়ে পড়ে ফুলের সৌরভ। বাঁশবাড়ি কলোনির বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগেই করছেন এমন সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ।

সম্প্রতি ময়মনসিংহ নগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁশবাড়ি কলোনিতে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশে বাড়ির সামনে প্লাস্টিকের টবে নানা প্রজাতির গাছ। টবগুলোও লাল আর সাদা রঙে রাঙানো। ছোট ছোট বাড়ির দেয়ালে ছোট ছোট টব লাগিয়ে সেখানেও লাগানো হয়েছে ফুলের গাছ। কোনো কোনো বাড়ির টিনের চালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে প্লাস্টিকের টব। একটু পরপর গাছের ফাঁকে ফাঁকে লেখা আছে, এই গাছ বিক্রির জন্য নয়।

বাঁশবাড়ি কলোনির বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগেই করছেন এমন সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ

বাঁশবাড়ি কলোনির বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগেই করছেন এমন সৌন্দর্যবর্ধনের কাজছবি: প্রথম আলো

বাঁশবাড়ি কলোনির বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, ‘আগে আমাদের কলোনির সড়কটি ছিল বেহাল। যে কারণে কাদা আর দুর্গন্ধ ছিল। বছরখানেক আগে সড়কটির সংস্কার করা হয়। পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থাও উন্নত করা হয়। এতে বর্ষা মৌসুমে সড়কে আর পানি জমে না, কাদাও হয় না। এর পর থেকেই এলাকার কয়েকজন তরুণের উদ্যোগে বাড়ির সামনে ফুলের গাছ লাগানো শুরু হয়।’

বাঁশবাড়ি কলোনির সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন মুরাদ হোসেন ও মেহেদী হাসান। তাঁরা জানান, এই উদ্যোগে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ এলাকার সব মানুষের সহযোগিতা আছে। মুরাদ ও মেহেদী এই প্রতিবেদককে পুরো এলাকা ঘুরিয়ে দেখান। তাঁরা জানান, এলাকাজুড়ে টবে লাগানো হয়েছে পাতাবাহার, হাসনাহেনা, টগর, রঙ্গন, চেরি, কামিনী, গন্ধরাজসহ নানা প্রজাতির ফুল ও লতার গাছ।

এলাকার বাসিন্দা ভানু রজক বলেন, ‘এমন উদ্যোগ আমাদের কলোনিকে বদলে দিয়েছে। মানুষের মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। এখন সবাই নিজের উদ্যোগে বাড়ির সামনের সড়কটি পরিচ্ছন্ন রাখে। নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে কেউ আবর্জনা ফেলে না। রাতে ফুলের সৌরভে ভরে যায় এলাকা।’

বাঁশবাড়ি কলোনির বাসিন্দাদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক সম্প্রতি এলাকাটি দেখতে যান। তিনি এ কাজের জন্য উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানান। মেয়র বলেন, বাঁশবাড়ি কলোনির মতো অন্য এলাকার বাসিন্দারাও এমন উদ্যোগ নিলে ময়মনসিংহ নগরটি আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *